আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরধরে দূবৃর্ত্ত ছেলেকে দিয়ে দিন-মজুর স্বামীকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত করা হয়েছে। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে। ঘাতক ছেলে পলাতক হলেও প্ররোচনাকারীকে স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ ।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৪জুন) ভোররাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা পশ্চিম পানখালীর মৃত ফকির মোহাম্মদের ছেলে দিন-মজুর শাহ আলম ওরফে শাহাব মিয়া শাবু (৬৬) মৃত্যুবরণ করেন। আইনী প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,গত ১জুন বিকালে স্বামী সাবু ও স্ত্রী নুর নাহারের মধ্যে পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ঝগড়ার সুত্রপাত হলে স্থানীয় মৃত কবির আহমদ মেম্বারের ছেলে নুরুল ইসলামের নিকট নালিশ করতে যায় নুর নাহার। কিছুক্ষণ পর স্বামী সাবুও একই বিষয়ে নালিশ করতে যায়। ইতিমধ্যে নুর নাহার হোয়াইক্যং এলাকায় বসবাসরত তার ছেলে ডাকাত জয়নালকে ফোনে ডেকে নিয়ে আসে। তখন নুরুল ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পথিমধ্য হতে সমাজের সর্দার ফরিদকে ডেকে ভিকটিমদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ঘরের আঙ্গিনায় প্রবেশের সাথে সাথে পিতা পক্ষ এবং মা পক্ষ দুগ্রুপের মধ্যে থেমে থেমে প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলে। এসময় সালিশকারীরা কোন প্রকারে ঝগড়া থামিয়ে উত্তেজনার মধ্যে সমাধান না করে কয়েক দিন পর পরিস্থিতি শান্ত হলে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে স্ত্রী নুর নাহারকে আপাতত এক ছেলের বাড়িতে থাকার আহবান জানালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ডাকাত জয়নাল কোথা হতে ছুরি এনে একেবারে ছোট ভাইকে ছুরিকাঘাত করার জন্য ধাওয়া করে। তখন পিতা সাবু বাঁধা দিতে গেলে ছেলে জয়নাল তার বাবাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
নিহতের ভাই সোনা মিয়া জানান,ছুরিকাঘাতকারী ঘাতক ছেলে ডাকাত জয়নাল পালিয়েছে ও প্ররোচনাকারী স্ত্রী নুর নাহারকে আমরা জনসাধারণ আটক করে রেখেছি। আমার ভাইয়ের বিচার নিশ্চিত করতে আমি বাদী হয়ে মামলার পর তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ নুর আহমদ কালু জানান,বিষয়টি থানা পুলিশ অবহিত হওয়ার পর এসআই জালাল আহমদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তথ্য উপাত্ত যাচাইয়ের পর ফিরে যায়। মৃতদেহ পোস্টমর্টেম শেষে বাড়িতে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার হোছাইন আহমদ জানান,আমি অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছি। তবে লোক মারফতে তাদের পরিবারে সংঘর্ষ ও ছুরিকাঘাত হওয়া এবং পরে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর খবর পেয়েছি।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান,এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা খুবই দুঃখজনক। উক্ত বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশা রাখি। তিনি সর্বস্তরের মানুষকে এই জাতীয় কর্মকান্ড থেকে বিরত থেকে এলাকা ও সমাজকে শান্তিপূর্ণ বসবাসের উপযোগী রাখার আহবান জানান।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি জানান,স্থানীয় লোকদের মারফতে এ ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত